প্রকাশিত: / বার পড়া হয়েছে
তুমি আমাকে চিনতে পারো না,
এটা কি আমার অপরাধ?
তুমি আমাকে বুঝতে পারো না, আমি কোন সংঘে আছি?
এটা কি আমার সীমাবদ্ধতা, নাকি তোমার একান্ত?
তুমি কখনো আমাকে চিন্তা করেছো,
প্রগতির সুরে, কখনো দেখেছো বিশ্বাসী এক ভীড়ে,
কিংবা কীর্তনের সুরে,
রমনার বটমূলে গাওয়া সমবেত সঙ্গীতে।
তুমি দেখেছো হাসির আচ্ছাদনে,
বইমেলায়, কিংবা মঙ্গলযাত্রায়,
বাঙালি সংস্কৃতির ঢেউয়ে ভেসে যেতে।
তুমি দেখেছো আমাকে,
ডান দলের শীর্ষ নেতার ভাষণ শোনার ভিড়ে,
কখনো আমাকে দেখেছো,
বাম দলের শিষ্যদের দিকে হাত বাড়াতে,
তুমি ঠিকই দেখেছো,
আমি ছিলাম সকলের শ্রোতা, প্রত্যক্ষদর্শী ভালোবাসার ডালা হাতে।
তুমি দেখেছো আমাকে বিপ্লবে,
অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়া দলেও,
সত্যের পক্ষে তালি বাজাতে।
তুমি দেখেছো আমাকে,
জুম্মার কাতারে,
মাজারে মাজারে, রাতবিরাতে প্রার্থনায়।
তবে কেন তোমার চোখে আমি বিভ্রান্ত?
আমি কি সিয়া না সুন্নি?
তুমি প্রশ্ন তুলেছো আমার মাযহাব নিয়ে,
আমার সংঘ নিয়ে,
কোন রাজনৈতিক সংঘের আমি?
কোথাও পাবে না,
লিপিবদ্ধ তালিকায় নাম আমার।
সংঘভুক্ত হওয়ার যোগ্যতা না থাকায় কোন পদ পদবী সম্মানী থেকে দূরে ঠেলেছো।
কোন সভা-সংঘের শিন্নি থেকে বঞ্চিত করেছ।
তাতে আমি ক্ষতবিক্ষত নই,
তবে ট্যাটু না থাকার অজুহাতে সিন্নি দিতে না পারার সমবেদনার কায়ক্লেশ তোমার চোখে ফোটেনি।
বরং আইন মেনে সংঘভুক্তদের ম
াঝে সুবিধা বিতরণ এর অহংকারে তোমাকে ন্যূজ হয়ে পড়তে দেখেছি।
তোমার মন এভাবে বিভ্রান্ত
হলেও কর্মক্ষেত্রে অন্যায় ভাবে আমাকে ডিঙ্গানোর জন্য
পরাজিত দলের ট্যাগ লাগানোর ব্যর্থ চেষ্টার অনুশোচনাবোধ তোমাকে আচ্ছন্ন করে বটে!
গ্লানি থেকে মুক্তি পেতে তুমি আমার ফেসবুকে আমার পুরনো ছবি, প্রবন্ধ যেখানে কোন একটি সংঘের ট্যাগ লাগানোর মওকা লাভের উন্মত্ততায় তোমার স্বাভাবিক দিনগুলো ব্যাহত হয়।
কোন দলের ট্যাগ পেলে তুমি খুশি হবে?
পারবে না জানি।
সব ভালোর সঙ্গেই,
যেখানে আমি ছিলাম, আছি, থাকবো।
কোনো দলবদ্ধতা ছাড়াই,
আমি আমার স্বাতন্ত্র্য নিয়ে এগিয়ে চলেছি।
তুমি আমাকে ঠিকই খুঁজে পাবে,
মানবতার ভীড়ে,
আমিও তো মানুষ কোন ভুলত্রুটির উর্ধ্বে যে আমিও নই।
সেই বিবেচনায় মানুষ হিসেবে যখন ভাববে,
তুমি দেখবে আমি মানবতার ফেরিওয়ালা সংঘ শীর্ষে।
তুমি আমাকে বুঝতে বিভ্রান্ত,
কারণ আমি সদাসর্বদা ভাল কাজের সঙ্গে ছিলাম,
কোন সংঘে নয়।
তাই কোন সংঘ আমাকে স্বীকৃতি দেয়নি।
তুমি আমাকে বিহারী কিংবা রোহিঙ্গা বলেও চিহ্নিত করতে পারো,
যদি মানবতার ফেরিওয়ালার সংজ্ঞায় না ফেলো।
তাতেও আমার কোনো দুঃখ নেই,
বেদনা নেই।
আমাকে কেন তোমরা,
যতনা বড় মানুষ তার চেয়েও বড়
বেশি কোন ধর্ম বা দলের সদস্য হিসেবে চিহ্নিত করতে চাও?
সীমানা ছাড়িয়ে,
যখন চিন্তা করতে শিখবে,
তবে আমাদের মত অপাংন্তেয়দের!
ভালবাসতে, শ্রদ্ধা করতে, কাছে টানতে শিখবে।
তার পূর্বে,
আমরা তোমাদের দৃষ্টিতে,
দলহীন, ছন্নছাড়া পাখির মতো উড়তে থাকব,
মুক্ত আকাশে।
তোমরা আমাদের গন্তব্য খুঁজতে থাকো,
উড়তে উড়তে সেই গন্তব্য ঠিকই একদিন খুঁজে পাবে।
জানি,
আমরা তোমাদেরই সঙ্গে আছি,
তোমাদের সকল আনন্দে,
তোমাদের সকল সৎকাজে,
তোমাদের সঙ্গে আছি
কেবল নেই সংঘে।
---
সঙ্গ এবং সংঘ'দর্শন আমার প্রিয় অনুবাদক গবেষক সংস্কৃতি ছবি বাচিক শিল্পী মধুসূদন মিহির চক্রবর্তী সঙ্গে দীর্ঘ আলোচলতায় শব্দ দুটির মাহাত্ম্য আমার আত্মস্থ হয় সেই অনুপ্রেরণা থেকেই মূলত এই রচনা। রচনাটি তাকে নিবেদন করলাম